শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৫:২০ পূর্বাহ্ন
মো. আবদুর রউফ:
২০৩ পদাতিক ব্রিগেড খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ড. মহিউদ্দিন আহমেদ, এসজিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি, পিএইচডি বলেছেন, সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আছে।বিভিন্ন সমস্যার কারণে সেনাবাহিনী এখানে দায়িত্ব পালন করছে। বিভিন্ন ধরনের দায়িত্বের মধ্যে অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে সরকারকে সহযোগিতা করা। যে সমস্যা নিরসনে সরকার চুক্তি করেছে, সেই চুক্তির বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করছে। আমাদের মূল দায়িত্ব হচ্ছে শান্তি ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত। যেটা হচ্ছে সহযোগীতার স্বরূপ। আমাদের দায়িত্বের ক্ষেত্রে মূলত মূল টার্গেট থাকে সন্ত্রাসী। কিন্তু স্থানীয় জনগনের সাথে আমাদের সম্পর্ক সবসময় সৌহাদ্যপূর্ণ, সম্প্রীতি এবং বন্ধুত্বপূর্ণ থাকবে। শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নে সম্পর্কের মধ্যে নিজেদের জড়িয়ে রাখবে। নিরাপত্তা, উন্নয়ন, সমাজসেবামুলক কিছু দায়িত্ব; যেমন- শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রেও সেনাবাহিনী সম্পৃক্ততা থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করছে।
তিনি বুধবার (২৯মার্চ) বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের আয়োজনে খাগড়াছড়িতে জেলা শহরে মিলনপুরস্থ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা জানি, পাহাড় সমতলের মতো নয়, এখানে ভূমির বাস্তবতা কারণে সমস্ত সুযোগ সুবিধা সবার কাছে সমানভাবে পৌঁছায় না। সরকারের আন্তরিকতা আছে। সরকারের আন্তরিকতা থাকা সত্ত্বেও সবাই সমানভাবে উন্নয়নের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে না। সেনাবাহিনীর দায়িত্বের অংশ হিসেবে যেহেতু আমরা দুর্গম এলাকাতে থাকি। ফলে সরকারের সুফলতাকে আমরা চেষ্টা করি যতদূর সম্ভব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। স্থানীয় জনগনের কল্যাণের জন্য অতীতে সেনাবাহিনীর যে অবদান ছিলো তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। এজন্য প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। কোন কাজ একা করা সম্ভব নয়। কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে সকলের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আয়োজিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুশীল জীবন ত্রিপুরা।
আলোচনা সভায় বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয় প্রকাশ ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ির প্রাক্তন সংসদ সদস্য যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরা।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সেনা রিজিয়নের জিটুআই মেজর জাহিদ হাসান, পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বাংলা একাডেমি পুরষ্কারপ্রাপ্ত লেখক প্রভাংশু ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সাবেক সভাপতি সুরেশ মোহন ত্রিপুরা, মনীন্দ্র কিশোর ত্রিপুরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র লাল রোয়াজা, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য খোকনেশ্বর ত্রিপুরা ও হিরন জয় ত্রিপুরা, রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত লেখক শোভা রানী ত্রিপুরা, কল্যাণ সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বিবিসুৎ ত্রিপুরা (সুকান্ত), সাধারণ সম্পাদক স্নেহাশীষ ত্রিপুরা (মিঠু), সাংগঠনিক সম্পাদক তাপস কুমার ত্রিপুরা, পেরাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তপন বিকাশ ত্রিপুরা, গোলাবাড়ি ইউপির চেয়ারম্যান উল্লাস ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জ্ঞানদত্ত ত্রিপুরা, থাইল্যান্ডের এআইপিপি কো-অর্ডিনেটর চারু বিকাশ ত্রিপুরা সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের নেতৃবৃন্দের নিকট আসন্ন বৈসু উৎসবের জন্য নগদ ১লক্ষ টাকার চেক, উন্নতমানের সাউন্ড সিস্টেম এবং ১০০টি রাবার চেয়ার উপহার স্বরূপ প্রদান করেন রিজিয়ন কমান্ডার। এছাড়াও যেকোন সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন তিনি।
সভা শেষে বাংলাদেশ ত্রিপুরা যুব কল্যাণ সংসদের সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক সুষ্মিতা ত্রিপুরার সৌজন্যে সুষ্মিতা ড্যান্স একাডেমীর নৃত্য শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত করা হয়।